ইসমে আজম দোয়া - মনের আশা পূরণের অনন্য উপায় 'ইসমে আজম'
মনের আশা পূরণের এক অনন্য উপায় হলো ইসমে আজম। এর মাধ্যমে কোন দোয়া করা হলে তা আল্লাহর নিকট সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্যতা পায়। তাই আল্লাহর কাছ থেকে কিছু পাওয়ার জন্য আমাদের ইসমে আজমের দ্বারা দোয়া প্রার্থনা করতে হবে।
ইসমে আজমের দ্বারা দোয়া প্রার্থনা করার জন্য বেশ কিছু নিয়ম রয়েছে। আপনি যদি এ সম্পর্কে জেনে না থাকেন তবে এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য আমাদের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। তবেই আপনি এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
ইসমে আজম কি
ইসমে আজম কি? এটা সম্পর্কে আমরা বেশিরভাগ মানুষই জানি না। তবে আমরা এটা জানি যে ইসমে আজমের দ্বারা কোনো দোয়া করা হলে তা মহান রাব্বুল আলামিনের নিকট গ্রহণযোগ্যতা পায় এবং আল্লাহ তা'আলা সেই দোয়া কবুল করেন। কেননা এই বিষয়গুলো বিভিন্ন হাদিসের দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে।
তাই আমাদের আল্লাহর নিকট কোন দোয়া প্রার্থনা করতে হলে ইসমে আজমের মাধ্যমে করতে হবে।কিন্তু তার আগে আমাদের অবশ্যই ইসমে আজম কি এই সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান থাকতে হবে। তাহলে চলুন ইসমে আজম বিষয়টি আসলে কি সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
আরো পড়ুনঃ শবে বরাতের আমল - শবে বরাতে করনীয় ও বর্জনীয়
ইসমে আজম কথাটি দুটি শব্দের। এর প্রথম শব্দ "ইসম" যার বাংলা অর্থ হলো নাম এবং দ্বিতীয় শব্দটি হলো "আজম" যার অর্থ হলো মহান বা শ্রেষ্ঠ। অর্থাৎ ইসমে আজম অর্থ শ্রেষ্ঠ নাম। আল্লাহ তা'আলার অনেকগুলো নাম রয়েছে। এসবের মধ্যে যে নাম গুলো দিয়ে আল্লাহ তা'আলার বড়ত্ব, মহত্ব ও শ্রেষ্ঠত্ব সবচেয়ে বেশি প্রকাশিত হয় সেই সব নামগুলোকে ইসমে আজম বলা হয়। অর্থাৎ এক কথায় বলা যায়, ইসমে আজম হলো আল্লাহ তা'আলার শ্রেষ্ঠ নাম সমূহ।
ইসমে আজম কখন পড়তে হয়
ইসমে আজম কখন পড়তে হয়? এটি একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং বহুল জিজ্ঞাসিত একটি প্রশ্ন। এই পর্যায়ে আমরা এই প্রশ্নের উত্তর দেয়ার চেষ্টা করব। আমরা অনেকেই আছি যারা ইসমে আজম আমল করতে চাই কিন্তু আমলটি কখন করতে হয় তা না জানার কারণে আমলটি করতে পারিনা। যেহেতু এটি ইচ্ছা পূরণের আমল সেহেতু এটি কোন সময় করা বেশি উত্তম তা ভালোভাবে জেনে নিতে হবে।
প্রতিটি আমলের একটা নির্দিষ্ট সময় রয়েছে। আমরা যদি ঐ নির্দিষ্ট সময়ে আমলগুলো করতে পারি তবে এর থেকে বেশি উপকৃত হতে পারব। কারণ উপযুক্ত সময় আমল করলে আল্লাহ তা'আলা বেশি খুশি হন এবং সেই আমলের প্রতি গুরুত্ব বেশি দেন। এটি যেহেতু আমাদের চাওয়া পাওয়া আল্লাহর কাছে পেশ করার একটি আমল তাই আমরা যখন সবচেয়ে বেশি আল্লাহর নিকটবর্তী হয় তখন এই আমলটি করা উচিত।
আমরা সকলেই জানি একজন বান্দা আল্লাহ সবচেয়ে নিকটবর্তী স্থান লাভ করে নামাজের মাধ্যমে। এজন্য আমরা যদি চাই আল্লাহ তাআলা আমাদের দোয়া কবুল করুক তবে আমাদেরকে নামাজে সালাম ফেরানোর পরে ইসমে আজম পড়ে আল্লাহর নিকট দোয়া প্রার্থনা করতে হবে। এ সম্পর্কিত একটি হাদিস নিচে বর্ণনা করা হলো।
হযরত আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, একদা রাসুল (সঃ) নামাজের পর জায়েদ ইবনে সাবিতের (রহ:) এর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন, এ সময় জায়েদ ইবনে সাবিতের (রহ:) ইসমে আজম দ্বারা দোয়া প্রার্থনা করছিলেন। তখন রাসুল (সঃ) বললেন, তুমি কি জানো, তুমি কি দোয়া করছো? তুমি দোয়া করছো ইসমে আজম দ্বারা, যেটি দিয়ে দোয়া করলে মহান আল্লাহ তা'আলা কবুল করেন এবং তা দ্বারা কিছু চাইলে তা প্রদান করেন। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস নং-৩৫৪৪)
এ হাদিস দ্বারা বোঝা যায় নামাজের পর যদি আল্লাহর কোন বান্দা ইসমে আজম দ্বারা দোয়া করে তবে তার দোয়া অবশ্যই কবুল করা হয়। তবে আপনি চাইলে ইসমে আজমের সাহায্যে যেকোনো সময় দোয়া করতে পারবেন এবং আল্লাহ তা'আলা সেই দোয়া কবুল করবেন।
এ সম্পর্কে রাসুল (সঃ) বলেন, যে ব্যক্তি ইসমে আজমের দ্বারা দোয়া করে তার দোয়া আল্লাহ তা'আলা কবুল করেন। (মুসনাদে আহমদ, হাদিস নং-১২২০৫) অন্য একটি হাদিসে এসেছে,যে আল্লাহর ঐ ইসমে আজম দ্বারা দোয়া করেছে যা দ্বারা দোয়া করা হলে তিনি তা কবুল করেন, আর যা দ্বারা কোন কিছু চাওয়া হলে তা তিনি দান করেন। (সুনানে নাসাঈ, হাদিস নং-১৩০০)
এ থেকে বোঝা যায় যে ইসমে আজমের দ্বারা কোন ব্যক্তি যে কোন সময় আল্লাহ তা'আলার নিকট দোয়া প্রার্থনা করতে পারেন। তবে সবচেয়ে উত্তম হলো নামাজ শেষে মোনাজাতের আগে ইসমে আজমের মাধ্যমে আল্লাহ তা'আলার নিকট দোয়া প্রার্থনা করা। এভাবে দোয়া করলে তিনি বান্দা দোয়া কবুল করেন। তবে তা অবশ্যই পণ্য একাগ্রতা ও এখলাসের সঙ্গে বলতে হবে।
ইসমে আজম পড়ার নিয়ম॥ ইসমে আজম কিভাবে পড়তে হবে
আমরা এটার মধ্যে জেনেছি যে ইসমে আজমে তারা আল্লাহতালা নিকট দোয়া করলে তা কবুল করা হয়। এখন আমাদের মধ্যে প্রশ্ন জাগতে পারে এটা কিভাবে পড়তে হয়। এটি পড়ার নির্দিষ্ট কোন নিয়ম নেই। এর জন্য আপনাকে পাক পবিত্র হয়ে একাগ্রতার সাথে আল্লাহ তাআলার কাছে ইসমে আজম পড়ে দোয়া করতে পারেন। এতে কোন সমস্যা নেই।
তবে সবচেয়ে উত্তম হলো ফরজ সালাত শেষ করার পর ইসমে আজম পড়ে আল্লাহ তা'আলার নিকট দোয়া করা। কেননা এ সময় বান্দা আল্লাহর সবচেয়ে নিকটবর্তী লাভ করে। এক্ষেত্রে আপনি সালাতের শেষ বৈঠকে বা সালাম ফেরানোর পর নিম্নোক্ত দোয়া পাঠ করতে পারেন।
দোয়াঃ "আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকা বিআন্নাকা আনতাল্লা-হুল আহাদুছ ছামাদুল্লাযী লাম ইয়ালিদ ওয়া লাম ইউলাদ ওয়া লাম ইয়াকুল লাহূ কুফুওয়ান আহাদ।"
উক্ত দোয়াটি পাঠ করে আপনি আপনার ইচ্ছাগুলো আল্লাহর নিকট পেশ করতে পারেন। এতে করে আশা করা যায় আল্লাহ তা'আলা আপনার দোয়া করলো কবুল করবেন। উপরোক্ত দোয়া ছাড়াও আপনি চাইলে অন্যান্য ইসমে আজম পাঠ করতে পারেন। কেননা আল্লাহ তা'আলা বান্দার মুখ থেকে তার প্রশংসা শুনতে অনেক বেশি পছন্দ করেন এবং এ সময় কোনো দোয়া করা হলে তিনি তা কবুল করেন।
ইসমে আজম দোয়া ফজিলত
আমরা এতক্ষণে সকলেই ইসমে আজমের ফজিলত সম্পর্কে কমবেশি ধারণা পেয়েছি। কেননা যে দোয়া পড়ে আল্লাহ তা'য়ালার কাছে কিছু চাইলে তা খুব দ্রুত কবুল হয় সে দোয়ার ফজিলত অনেক বেশি। ইসমে আজমের মাধ্যমে দোয়া করলে আল্লাহতালা অনেক বেশি খুশি হন। কেননা এতে আল্লাহর মহত্বের কথা তুলে ধরা হয়। এ কারণে এর মাধ্যমে দোয়া করলে আমাদের দোয়া কবুল হয়।
তবে অবশ্যই দোয়া করার সময় একাগ্রতার সহিত দোয়া করতে হবে। লোক দেখানো বা অবিশ্বাসের সহিত দোয়া করলে তা কখনো কবুল হবে না। আল্লাহ তা'আলা অন্তর্যামী। তিনি আমাদের অন্তরের কথা খুব ভালোভাবে জানেন। তাই আমরা কিভাবে দোয়া করছি তা তিনি বুঝতে পারেন। এজন্য ইসমে আজমের দোয়া গুলো পাঠ করতে হবে একাগ্রতার সহিত। তাহলেই আল্লাহতালা আমাদের ইচ্ছে গুলো পূরণ করবেন।
হাদিস শরীফে নবী করীম (সা.) ইসমে আজমের ফজিলত সম্পর্কে বর্ণনা করেছেন। এ সম্পর্কিত বিভিন্ন হাদিস বর্ণিত রয়েছে। হযরত আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, একদা রাসুল (সঃ) নামাজের পর জায়েদ ইবনে সাবিতের (রহ:) এর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন, এ সময় জায়েদ ইবনে সাবিতের (রহ:) ইসমে আজম দ্বারা দোয়া প্রার্থনা করছিলেন। তখন রাসুল (সঃ) বললেন, তুমি কি জানো, তুমি কি দোয়া করছো? তুমি দোয়া করছো ইসমে আজম দ্বারা, যেটি দিয়ে দোয়া করলে মহান আল্লাহ তা'আলা কবুল করেন এবং তা দ্বারা কিছু চাইলে তা প্রদান করেন। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস নং-৩৫৪৪)
এ হাদিস দ্বারা বোঝা যায় নামাজের পর যদি আল্লাহর কোন বান্দা ইসমে আজম দ্বারা দোয়া করে তবে তার দোয়া অবশ্যই কবুল করা হয়। তবে আপনি চাইলে ইসমে আজমের সাহায্যে যেকোনো সময় দোয়া করতে পারবেন এবং আল্লাহ তা'আলা সেই দোয়া কবুল করবেন।
এ সম্পর্কে রাসুল (সঃ) বলেন, যে ব্যক্তি ইসমে আজমের দ্বারা দোয়া করে তার দোয়া আল্লাহ তা'আলা কবুল করেন। (মুসনাদে আহমদ, হাদিস নং-১২২০৫) অন্য একটি হাদিসে এসেছে,যে আল্লাহর ঐ ইসমে আজম দ্বারা দোয়া করেছে যা দ্বারা দোয়া করা হলে তিনি তা কবুল করেন, আর যা দ্বারা কোন কিছু চাওয়া হলে তা তিনি দান করেন। (সুনানে নাসাঈ, হাদিস নং-১৩০০)
তবে অনেক সময় ইসমে আজমে তারা চাওয়ার পরেও আমাদের ইচ্ছা পূরণ হয় না। যদিও ইচ্ছা গুলো নেক হয়। সাধারণত এর মধ্যে কয়েকটি কারণ উল্লেখ থাকে। কারণগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো হয়তো যে দোয়াটি করা হয়েছে তা এখন আপনার জন্য মঙ্গল নয়। তাই আল্লাহ তায়ালা সঠিক সময় সেটা দান করবেন। আরেকটি হতে পারে আল্লাহতালা আপনার ইচ্ছা পূরণ না করে তার বিনিময়ে আপনাকে বিপদ থেকে রক্ষা করেছে। আরেকটি কারণ হতে পারে আল্লাহতালা আপনাকে আপনার মনের আশা অপূর্ণ রাখার কারণে উত্তম প্রতিদান দান করবেন।
তবে আপনি যদি একাগ্রতার সাথে এবং পূর্ণ বিশ্বাস নিয়ে ইসমে আজমের মাধ্যমে আল্লাহর নিকট নেক দোয়া করেন তবে তিনি খুব তাড়াতাড়ি তা কবুল করবেন। তাই আমাদের উচিত বেশি বেশি ইসমে আজমের দ্বারা দোয়া প্রার্থনা করা।
ইসমে আজম দোয়া কয়টি
আমরা ইতিমধ্যেই ইসমে আজম পড়ার নিয়ম এবং এটি কখন পড়তে হয় সেই সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমাদের মনে প্রশ্ন আসতে পারে ইসমে আজম দোয়া কতটি? যেহেতু আল্লাহ তা'লাকে খুশি করতে ইসমে আজম পড়া হয় তাই আমাদের এই দোয়া কতটি সে সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। ইসমে আজম আল্লাহ তা'লার নির্দিষ্ট কোন নাম কিনা তা সম্পর্কে বিজ্ঞ আলেমদের বেশ কিছু মতামত রয়েছে।
এসব মতামতকে পর্যালোচনা করলে দেখা যায় ইসমে আজমের দোয়া বেশ কয়েকটি। তবে পবিত্র কুরআনে ইসমে আজমের দোয়া দুই জায়গায় উল্লেখ করা হয়েছে বলে বিজ্ঞ আলেমগণ মতামত দেন। এর মধ্যে একটি হলো সূরা বাকারায়, আরেকটি হলো সূরা আল ইমরানে। কুরআন মাজীদে উল্লেখিত ইসমে আজমের দোয়া গুলো হলো-
উচ্চারণঃ "ওয়া ইলা-হুকুম ইলা-হূ ওয়া-হিদ, লা- ইলা-হা ইল্লা- হুওয়ার রহমা-নুর রহীম।"
অর্থঃ আর তোমাদের উপাস্য একমাত্র আল্লাহ তা'য়ালা। তিনি ব্যতীত আর কোন উপাস্য নেই। তিনি পরম করুণাময় এবং অতি দয়ালু। (সূরা বাকারা, আয়াত-১৬৩)
উচ্চারণঃ "আলিফ লা-ম মী-ম আল্লাহু লা- ইলা-হা ইল্লা- হুওয়াল হাইয়্যুল ক্বইয়্যূম।"
অর্থঃ তিনি আল্লাহ, যিনি ছাড়া আর কোন মাবুদ নেই। তিনি চিরঞ্জীব, সমগ্র জগতের নিয়ন্ত্রক। (সূরা আল ইমরান, আয়াত-১)
এই দোয়াগুলো কেউ যদি একাগ্রতার সাথে এবং বিশ্বাসের সাথে পাঠ করে আল্লাহর নিকট কোন কিছু প্রার্থনা করে তবে আল্লাহ তা'আলা তার এই দোয়াকে কখনো ফিরিয়ে দেন না। এছাড়াও ইসমে আজমের আরো অনেকগুলো দোয়া সম্পর্কে হাদিসে উল্লেখ রয়েছে। সেগুলো হলো-
দোয়াঃ "আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা বিআন্নি আশহাদু আন্নাকা আনতা আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা আনতাল আহাদুস সামাদুল্লাজি লাম ইয়ালিদ ওয়া লাম ইউলাদ ওয়া লাম ইকুল্লাহু কুফুওয়ান আহাদ।"
অর্থঃ "হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে প্রার্থনা করছি এবং আমি জানি, তুমিই আল্লাহ। তুমি ছাড়া আর কোন মাবূদ নেই। তুমি এক ও অদ্বিতীয়। তুমি অমুখাপেক্ষী ও স্বনির্ভর। তুমি তিনি! যিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কারো থেকে জন্ম হননি। যার সমকক্ষ কেউ নেই।"
এছাড়াও ইমাম মুহাম্মদ (রহ.) বলেন, আমি ইমামে আজম আবু হানিফা (রহ.) কে বলতে শুনেছি আল্লাহ তা'আলার ইসমে আজম হলো আল্লাহ নামটি। কেননা এই নামটি কোরআন মাজীদে ২,৬৯৭ বার উল্লেখ করা হয়েছে। এত বেশি বার আল্লাহর আর কোন নাম উল্লেখ করা হয়নি। (আত-তাকরির ওয়াত-তাহবির ১/৫)।
ইসমে আজম দোয়া আরবিতে
আমাদের মধ্যে অনেকে রয়েছেন যারা ইসমে আজমের দোয়াগুলো আরবিতে জানতে চান। তাদের সুবিধার জন্য এই পর্বে আমরা কুরআন মাজিদে ও হাদীস শরীফে উল্লেখিত ইসমে আজমের দোয়া গুলো আরবিতে একসাথে তুলে ধরার চেষ্টা করব। তাই যাদের ইসমে আজমের দোয়া গুলো আরবিতে জানার প্রয়োজন তারা এই পর্বটি ভালো করে পড়তে পারেন।
কুরআন মাজীদে উল্লেখিত নিয়মের দোয়া আরবিতে-
সূরা বাকারায় উল্লেখিত দোয়া- وَإِلٰهُكُمْ إِلٰهٌ وَّاحِدٌ لَا إِلٰهَ إِلَّا هُوَ الرَّحْمٰنُ الرَّحِيْمُ
সূরা আল ইমরানে উল্লেখিত ইসমে আজমের দোয়া- الٓمْ اَللهُ لَا إِلٰهَ إِلَّا هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّوْمُ
সূরা ত্বহায় উল্লেখিত ইসমে আজমের দোয়া- وَعَنَتِ ٱلْوُجُوهُ لِلْحَىِّ ٱلْقَيُّومِ
এছাড়াও হাদীস শরীফ উল্লেখিত ইসমে আজমের কতিপয় কিছু দোয়া নিচে দেওয়া হলো-
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ بِأَنَّ لَكَ الْحَمْدَ، لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ وَحْدَكَ لاَ شَرِيكَ لك الْمَنَّانُ بَدِيعَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ، يَا ذَا الْجَلالِ وَالإِكْرَامِ، يَا حَيُّ يَا قَيُّومُ
(আবু দউদ, হাদিসঃ১৪৯৫, তিরমিযী, হাদিসঃ৩৫৪৪, নাসাঈ, হাদিসঃ১৩০০)
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ أَنِّي أَشْهَدُ أَنَّكَ أَنْتَ اللَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ الْأَحَدُ الصَّمَدُ الَّذِي لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ وَلَمْ يَكُنْ لَهُ كُفُوًا أَحَدٌ
(আবু দউদ, হাদিসঃ১৪৯৩, তিরমিযী, হাদিসঃ৩৪৭৫, ইবন মাজাহ, হাদিসঃ৩৮৫৭)
ইসমে আজম দোয়া বাংলা অনুবাদ॥ Isme azam dua bangla
আমাদের মধ্যে অনেকে রয়েছেন যারা ইসমে আজমের দোয়াগুলো বাংলায় জানতে চান। তাদের সুবিধার জন্য এই পর্বে আমরা কুরআন মাজিদে ও হাদীস শরীফে উল্লেখিত ইসমে আজমের দোয়া গুলো বাংলায় অর্থসহ তুলে ধরার চেষ্টা করব। তাই যাদের ইসমে আজমের দোয়া গুলো বাংলায় জানার প্রয়োজন তারা এই পর্বটি ভালো করে পড়তে পারেন।
কোরআন মাজিদে উল্লেখিত ইসমে আজমের দোয়া হলো-
উচ্চারণঃ "ওয়া ইলা-হুকুম ইলা-হূ ওয়া-হিদ, লা- ইলা-হা ইল্লা- হুওয়ার রহমা-নুর রহীম।"
অর্থঃ আর তোমাদের উপাস্য একমাত্র আল্লাহ তা'য়ালা। তিনি ব্যতীত আর কোন উপাস্য নেই। তিনি পরম করুণাময় এবং অতি দয়ালু। (সূরা বাকারা, আয়াত-১৬৩)
উচ্চারণঃ "আলিফ লা-ম মী-ম আল্লাহু লা- ইলা-হা ইল্লা- হুওয়াল হাইয়্যুল ক্বইয়্যূম।"
অর্থঃ তিনি আল্লাহ, যিনি ছাড়া আর কোন মাবুদ নেই। তিনি চিরঞ্জীব, সমগ্র জগতের নিয়ন্ত্রক। (সূরা আল ইমরান, আয়াত-১)
হাদিসে উল্লেখিত ইসমে আজমের দোয়া হলো-
দোয়াঃ "আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা বিআন্নি আশহাদু আন্নাকা আনতা আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা আনতাল আহাদুস সামাদুল্লাজি লাম ইয়ালিদ ওয়া লাম ইউলাদ ওয়া লাম ইকুল্লাহু কুফুওয়ান আহাদ।"
অর্থঃ "হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে প্রার্থনা করছি এবং আমি জানি, তুমিই আল্লাহ। তুমি ছাড়া আর কোন মাবূদ নেই। তুমি এক ও অদ্বিতীয়। তুমি অমুখাপেক্ষী ও স্বনির্ভর। তুমি তিনি! যিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কারো থেকে জন্ম হননি। যার সমকক্ষ কেউ নেই।"
দোয়াঃ "আল্লাহুম্মা ইন্নি আস আলুকা বিআন্না লাকাল হামদ, লা ইলাহা ইল্লা আনতা, ওয়াহদাকা লা শারিকা লাকা, আল মান্নান, বাদিআস সামাওয়াতি ওয়াল আরদ্বি, ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম। ইয়া হাইয়্যু ইয়া কাইয়্যুম।"
অর্থঃ "হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে প্রার্থনা করি। তুমিই তো সকল প্রশংসার মালিক, তুমি ছাড়া কোন ইলাহ নেই। তুমি দয়াশীল। তুমিই আকাশসমূহ ও পৃথিবীর একমাত্র সৃষ্টিকর্তা! হে মহান সম্রাট ও সবোর্চ্চ মর্যাদার অধিকারী, হে চিরঞ্জীব, হে সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী।"
লেখকের মন্তব্য
ইসমে আজম যেহেতু ইচ্ছা পূরণের অনন্য এক উপায়, যার মাধ্যমে দোয়া করলে আল্লাহ তা'আলা মনের সকল নেক আশা পূরণ করে থাকেন তাই আমাদের এর দ্বারা আল্লাহর কাছে দোয়া করা উচিত। আমরা যেহেতু নামাজের সময় আল্লাহর সবচেয়ে নিকটবর্তী হই তাই সেজদাতে অথবা নামাজে সালাম ফেরানোর পর আমাদের ইসমে আজমে তারা আল্লাহর কাছে দোয়া করা উচিত। তাহলে আল্লাহ তা'আলা তা খুব দ্রুত পূরণ করবেন।
প্রিয় পাঠক, আজকের এই আর্টিকেল পরে আমরা ইসমে আজম পড়ার নিয়ম ও এর ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারলাম। আশা করি আপনারা এর সম্পর্কে বুঝতে পেরেছেন। এ সম্পর্কে যদি আপনার কোন জিজ্ঞাসা থাকে তবে আপনি কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। এছাড়াও আমাদের আজকের আর্টিকেল পড়ে আপনার কাছে কেমন লেগেছে সেই সম্পর্কে আপনার মূল্যবান বক্তব্য কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানান।
আপনি আপনার মূল্যবান মন্তব্যটি এখানে লিখুন। প্রতিটি মন্তব্য গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়।
comment url